রেণুর পুকুর প্রস্তুতির আগে প্রয়োজন-রেণুর পুকুর নির্বাচন করা। পুকুর নির্বাচনে ত্রুটি রয়েগেলে প্রতিনিয়ত মনে হবে রেণু আইসিইউতে আছে যেমন-
- তীব্র অক্সিজেন সঙ্কোট
- পিএইচ অনিয়ন্ত্রিত
- এমোনিয়া সৃষ্টি
সঠিক নিয়মে রেণুর পুকুর নির্বাচন
রেণু চাষে সঠিক পুকুর নির্বাচন করার জন্য যে বিষয়গুলোর উপর খেয়াল রাখতে হবে-
- পুকুরের আয়তন ৮-৪০ শতাংশ এবং ৩ ফুট-৩.৫ ফুট গভীরতা সম্পন্ন
- যার ঢাল হতে হবে রাজমিস্ত্রীর কড়াইয়ে মতো,
- নিরাপদ পানির উৎস
- পর্যাপ্ত আলো-বাতাস পায় এমন পুকুর।
উপরোক্ত রেণু চাষে সঠিক পুকুর নির্বাচন করলে এবং পানির উৎস্য নিরাপদ হলে আমি আবার বলছি পানির উৎস নিরাপদ হলে, এমন অনেক কিছুই রেণু চাষীকে পরিক্ষার প্রয়োজন পরবে না যা অনেকের কাছেই নতুন, ব্যায় সাপেক্ষ,বিরক্তিকর এবং প্রতিনিয়ত আতঙ্কের কারণ হবে।
বিস্তারিত নেপথ্যে –
উল্লেখ্য রাজমিস্ত্রীর কড়াইয়ের মতো পুকুর হলে উত্তম। অর্থ্যাৎ ১/২ ইঞ্চি থেকে শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে তা বাড়তে থাকবে। রেণুর জন্য পানির গভীরতা ২.৫ ফুট অথবা ৭ ফুট পার্থক্য হবে না যদি আপনার পাড় খাড়া হয় -কিনারেও ১ফুট থেকে দের ফুট পানি থাকে সেক্ষেত্রে রেণুর সমস্যা হবে- পানির চাপ বেশি অক্সিজেনের ঘাটতি হবে রেণুর জন্য-এক্ষেত্রে অক্সিজেন ট্যাবলেট অথবা অক্সিজেন জোগানের ওষুধ প্রয়োগ জরুরি/মজুত করে রাখতে হবে।
পক্ষান্তরে যদি একটি পুকুর কিনারের ঢাল ১/২ ইঞ্চি থেকে পর্যায়ক্রমে ১০ ফুটও গভীরতা সম্পন্ন হয় সেক্ষেত্রে নির্দীষ্ট সীমার মধ্যে রেণুর বিচরণ করবে এবং কিনারে সে তার অক্সিজেন প্রাপ্তি নিশ্চিত করবে।
আর একটি বিষয় খেয়াল করলে দেখা যায় রেণু দুপুরে কিনারে কম আসে কারণ একটু দূরেও সে ভালো অক্সিজেন পায়-কারণ হলো দুপুর ১২টা থেকে ২ টা পর্যন্ত পুকুরের পানিতে অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি অক্সিজেন থাকে।
পক্ষান্তরে সকালে এবং পড়ন্ত বিকেলে রেণু কিনারে আসে তখন বায়ুমন্ডলীয় চাপে অক্সিজেন সঙ্কট থাকে এজন্য- সেই সময় যদি খাড়া পুকুর থাকে যার কিনারেই গভীরতা ১ ফুট থেকে ২ ফুট সেক্ষেত্রে রেণু অক্সিজেন ঘাটতিতে পরে।
রেণু পুকুরের সঠিক গভীরতা নিরুপণে আপনার এমোনিয়ার সমস্যার অনেকাংশেই সমাধান করবে। অনেকের রেণুর পুকুর ২ ফুট- ২.৫ ফুট গভীরতা সম্পন্ন এমন সব পুকুর- যখন দীর্ঘ দিন এবং তীব্র তাপ দাহে পুকুরের পানিতে সূর্যালোক তীর্যকভাবে গভীরে পৌঁছে নিচে থাকা জলজ উদ্ভিজ্জ অণুজীবে সালোকসংশ্লেষণ ঘটায় এবং অতিরিক্ত তাপমাত্রায় জৈব পদার্থ পচন ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাতে নাইট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে রাসায়নিক যৌগে এমোনিয়া সৃষ্টি করে, সাথে জালি শ্যাওলারও সৃষ্টি হতে পারে।
এজন্যই রেণুর পুকুর প্রস্তুতের আগে পুকুর নির্বাচন এবং নিরাপদ পানির উৎস গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
রেণুর পুকুর নির্বাচনে উপরোক্ত বিষয়গুলো একে অপরের পরিপূরক তাই কোন একটির পরিবর্তন রেণু পুকুর ব্যবস্থাপনায় বিঘ্ন ঘটাবে।
লেখক
রাজ গোস্বামী
প্রতীভা রাজ মৎস চারণ প্রকল্প (ফিস র্পাক)
মাহিগঞ্জ, রংপুর।